আমার প্রথম স্ত্রীর পিতা অর্থাৎ আমার শ্বশুর একটি জেলার সিআইডি ইন্সপেক্টর ছিলেন। তার মুখে শুনতাম খুনোখুনি হয় তিনটি কারনে। সেই কারন তিনটি হলো নারী,সম্পদ আর টাকা। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন ; তাহলে খুনোখুনির আরো একটা কারন আমাকে শোনাতেন। তা হলো খুনোখুনির কারন, ফেসবুকে লেখালেখিও। তিনটি যোগ করে চারটি বলতেন।
কথায় আছে ‘নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না।’ আপনি যখন আপনার মতের বিরুদ্ধ একটি খুনকে প্রশ্রয় দেবেন। তখন তা একদিন আপনার জন্য বিপরীত ফলাফলও বয়ে আনবে, আনবেই। যা এখন চলমান। মার্কস্ বাদ পড়ে ও সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে সংযুক্ত হয়ে জেনে ছিলাম সম্পদে সীমাহীন ব্যাক্তিমালিকানা থাকলে মানুষে মানুষে খুনোখুনি অবধারিত। আমরা শুধু কোন ব্যাক্তির সীমাহীন ক্ষমতার বিরোধীতা করি। তাকে স্বৈরাচার বলি, ফেসিস্ট বলে ঘৃণা করি। অথচ সীমাহীন সম্পদের ব্যাক্তিমালিকানা থাকবে দখল-বেদখল,লুন্ঠন,শোষন,খুন, ধর্ষন ও যুদ্ধ থাকবে না ; তা প্রায় অসম্ভব। এ কথা বুঝতে ও মানতে চাই না ‘কমিউনিস্ট মত’ বলে।
সম্পদে সীমাহীন ব্যাক্তিমালিকানা স্বীকৃত থাকলে;কেবল একজন,দুজন,দশ জন,শতজনও নয়; লাখে লাখে লোক মরতে পারে৷ কোন ব্যাক্তি,গোষ্ঠী,রাষ্ট্র পরিকল্পিত ভাবে মেরে ফেলতে পারে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যাক্তি ও গোষ্ঠীকে। সম্পদে সমীহীন ব্যাক্তিমালিকানা যতদদিন থাকবে, ততদিন; ব্যাক্তি, ব্যাক্তিকে এবং এক রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য রাষ্ট্রকে দাবিয়ে রাখার পায়তারা চলেছিলো,চলছে,চলবেও। তা হতে পারে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উসকানি দিয়ে অথবা যুদ্ধ বাধিয়ে। ইতিহাস বলে বিশ্বযুদ্ধগুলো ছিলো প্রকৃত পক্ষে ; কয়েকজন ব্যাক্তি ও সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের গোঁয়ার্তুমি, ক্ষমতা প্রদর্শন ও বাজার দখলের লড়াই । জাপানে আনবিক বোমার আঘাতে যত না মানুষ মরেছে ভারতবর্ষের বাংলায় ২য় মহাযুদ্ধে তার চেয়ে বেশি মানুষ মরেছে। বৃটিশদের ভুল সমরনীতির কারনে খাদ্যশস্য গুদামে ভরপুর এবং গোলা ভরা ধান থাকতেও বাংলার ৫০ লক্ষ মানুষ শ্রেফ না খেয়ে মরে গেছে! জাপান যদি বাংলা দখল করেও নিতো তবুও এতলোক মৃত্যু বরণ করতো না। বাঙালি দুর্ভিক্ষে মরেছিলো ১৭৫৭ সালে বৃটিশ দখলদার আসার পর। বাঙালিকে দুর্ভিক্ষের ফাঁদে ফেলে মার্কিনীরাও মেরেছিলো ১৯৭৪ সালে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের অতিত ও বর্তমানের উদাহারণ নাই বা দিলাম।
ধান বানতে অনেকটা শীবের গীত গাওয়ার মত আবরার হত্যা কান্ড নিয়ে লিখতে গিয়ে ২য় বিশ্ব যুদ্ধের কথা তুলিনি। মনে করিয়ে দিতে চাইলাম, ২য় বিশ্বযুদ্ধের সাথে সম্পর্কহীন ৫০ লাখ মানুষ কি ভাবে বলির পাঠা হয়ে গেলো। কেন হলো? তা ভাবতে হবে। তেমনি আবার আবরার কে কারা খুন করলো তার চেয়ে বড় ভাবনার বিষয় আবরার ফাহাদ কেন খুন হলো। কেন একটি “অভিজাত” শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৯ জন ‘মেধাবী’ ছাত্র জোট বেধে আরো একজন ‘মেধাবীকে’ খুন করতে উদ্ধুদ্ধ হলো? তাও আবার নির্মম ভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে! তারা তো কোন মৌলবাদী পশ্চাৎপদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়লেখা করতে আসেনি। মধ্যযুগীয় বা প্রাচীন যুগের কোন শিক্ষক তাদের শিক্ষাপ্রদান করছিলো না। তাহলে কেন তারা একটি ফেসবুক পোষ্ট নিয়ে,দেড় ডজন লোক মিলে একজনকে পিটিয়ে মেরে উল্লাস করলো! এ উল্লাস একটি জাতির শিক্ষা ব্যাবস্থা দেওলিয়া হয়ে যাওয়ার উল্লাস নয় তো? মৌলবাদী উন্মাদনা ও পুঁজিবাদী উল্লাসের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কতটুকু? নতুন করে ভাবতে হবে।
আবার, আবরার ফাহাদকে “একটা শ্রেনী” “শহীদ” বানিয়ে ফেলেছে। কেন না, তারা এই হত্যাকান্ডকে ভারত ও আওয়ামী লীগ বিরোধী “আরো একটি মওকা’ হিসেবে নিয়েছে। আমরা কিন্তু আরো একটি বিশেষ শ্রেনীকে চিনি তারা কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মীরপুরে কসাই খ্যাত কাদের মোল্লা, নিজামী, মীর কাশেম আলী, বদর আল মুজাহিদেকেও “শহীদ ” মনে করে। আদালতের রায়ে পাক-হানাদারদের সহযোগী ঐ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধিদের কবরের নাম ফলকে শহদী লেখা থাকে(?)। এ দেশে স্বাধীনমত প্রকাশের জন্য আবরার ফাহাদই কি প্রথম খুন হওয়া ব্যাক্তি? যদি ” সিলেক্টিভ বাকস্বাধীনতাবাদী” শ্রেনীগুলোকে এমন প্রশ্ন করা হয় তার কি উত্তর দেবে তা আমি জানি না।
তবে ইতিহাস বলে, বাকস্বাধীনতার হস্তক্ষেপে প্রথম বাংলাদেশ থেকে কবিতা লেখার কারনে বিতাড়িত হয় কবি দাউদ হায়দার। দ্বিতীয়ত ‘লজ্জা ‘উপন্যাস লেখার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় কবি ও ঔপন্যাসিক ডাক্তার তসলিমা নাসরিন। তারপর লেখালেখির মাধ্যমে মতপ্রকাশের কারনে প্রথম যে ব্যাক্তিটির রক্তে এ দেশের মাটি লাল হয়, তিনি হচ্ছেন বহুমাত্রিক প্রতিভাধর ব্যাক্তি, ভাষাবিজ্ঞানী, কবি,ঔপন্যাসিক, প্রথা বিরোধী লেখক, সমালোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাবিভাগের অধ্যাপক ডক্টর হুমায়ুন আজাদ। আজকে যে শ্রেনীটি (সকলেই নয়) আবরার ফাহাদ হত্যায় কুম্ভিরাশ্রু বর্ষন করে চলছে সে শ্রেনীটি উল্লেখিত ব্যাক্তিদের বিতাড়ন কেবল সমর্থন করেননি তারা আন্দোলন করেছেন তাদের লেখা ও ব্যাক্তিদের স্বাধীন মত স্তব্ধ করে দিতে। ভিন্ন মত প্রকাশের কারনে এরা শাস্তির দাবিও করেছেন। ডক্টর হুমায়ুন আজদকে হত্যার উদ্দ্যেশে কোপানোকে বৈধতা দেয়ার জন্য কত রকম ওজর-আপত্তি তোলা হয়েছে তা আমরা জানি। আমরা কিন্তু এ বাংলাদেশে ব্যানার নিয়ে মিছিল করতেও দেখেছি “নাস্তিকদের ফাঁসী চাই!”
আর ভিন্নমত প্রকাশের কারনে এ দেশের ২২/২৩ জন ব্লগার সহ, সমকাম অধিকার কর্মি জুলহাস ও তনয়কে খুন করা হলে এ দেশের একটা শ্রেনী উল্লাসও করেছে। এখনো তা করে। তখন তারা ভুলে গিয়েছিলো বাকস্বাধীনতার কথা। তারাও দেখি আজ আবরার ফাহাদ হত্যা বেজায় সরব। এমন কি এক শ্রেনীর কথিত বামপন্থীরাও ব্লগারদের ভিন্নমত প্রকাশের জন্য খুন হলে, খুনি নয়, খুন হওয়াদেরই লেখা ও মতের কঠোর সমালোচনা করেছেন। মনের মাধূরী মিশিয়ে লেখালেখির পেছনে আজগুবি তত্ব খাড়া করতেন এক শ্রেনীর বামপন্থীরা। এমন কি এরা কেউ কেউ ব্লগারদের খুন হওয়ার জন্য খোদ ব্লগার ও তাদের নিজের মতকেই দোষারোপ করেছেন। আমরা তাদেরও চিনি। আজ এই শ্রেনীগুলোই শর্তহীনভাবে আবরার ফাহাদের মত প্রকাশের কারনে খুন হওয়ার প্রতিবাদে, মতপ্রকাশের দাবী আদায়ের “বিপ্লবী” সেজেছে। আগেই উল্লেখ করেছি আবরার হত্যাকান্ডকে এরা আরো একটি ভারত বিরোধী ও আওয়ামী বিরোধী মওকা হিসেবে নিচ্ছে। এ সকল শ্রেনীর এই এই “বিপ্লব ‘ আসলে বাকস্বাধীনতার পক্ষে দরদ নয়।
তার একটি জলন্ত উদাহারন দেই। একজন সাবেক কমিউনিস্ট ‘প’ অদ্যক্ষর দিয়ে যার নাম শুরু এবং তিনি নিজেও একজন হিন্দু।যদিও তার বিরুদ্ধে “ধর্মান্তরীত” হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সেই তিনি ঐ দুই শ্রেনী থেকে আরো এক কাঠি সরেস বাকস্বাধীনতাবাদী! তিনি ফেসবুকে বলে ফেললেন, এক হিন্দু “অনিক সরকার” মুসলিম আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে! তিনি এই হত্যাকান্ডকে কেবল ভারত ও আওয়ামী বিরোধী মওকা হিসেবেই নিলেন না। সরাসরি হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক ইসুও বানালেন! যেহেতু তার রয়েছে ৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধী হাজার হাজার হাজার ফলোয়ার। ভারত বিরেধীরা তো সেই ভট্টকে পীরানে পীরই মনে করে। তাই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাইলেন। যদিও এজাহারে দেখা গেলো, অনিক সরকার আসলে হিন্দু নয়। সে আসমাী, মোহাম্মদ অনিক সরকার, যার পিতার নাম মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সেই জালিয়াত কমিউনিস্ট ভট্টর এই রকম সাম্প্রদায়িক ফেসবুক পোষ্ট ১ শত আবারার ফাহাদ হত্যাকান্ড থেকে বড় ও ভয়ংকর অপরাধ তাও ভুলে গেলে চলবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বাসায় একদিন রাতের খাবার খাচ্ছিলাম। এমন সময় তার মা একটি জাতীয় দৈনিক দেখিয়ে বলছিলেন; “বাবা সরকারের সমালোচনা করে কিছু লিখো না। তোমাকে জেলে নিবে।” জবাবে মুক্তচিন্তার সেই শিক্ষকটি তার মাকে বিনয়ের সাথে বলছিলেন; ‘মা আমি যতদিন বেঁচে আছি সব সরকারের সমালোচনা করে যাবো। আমরা সমালোচনা বন্ধ করে দিলে সরকারগুলো স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে।’ আমি যতদুর তাকে চিনি তিনি বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাদাকালো দলের কেউ নন। এমনকি সমাজতন্ত্রিও নন। বরং তিনি মাঝে সমাজতন্ত্রকে কঠোর সমালোচনাও করে থাকেন। তিনি বলে থাকেন শেখ ফরিদ তুমি মুক্ত চিন্তার মানুষ, কমিউনিস্ট হয়ে গেলে কিভাবে! কমিউনিজম ও ধর্মগুলোর মত ফ্যাসিষ্ট মতবাদ। ব্যাক্তি ও বাক স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। আমি স্যারের সাথে বিতর্কে যাইনি, যে পুঁজিবাদীদের দ্বারা প্রচারিত স্বাধীনতা আর মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা এক নয়।
কি লিখেছিলো আবরার ফাহাদ তার ফেসবুক পোষ্টে? সরকারের সমালোচনা ছিলো এই তো। আমি তার ফেসবুক পোষ্ট পড়েছি। তা সরকারের ভারতনীতির কিছু সমালোচনা ছিলে যা কোন ভাবেই কঠোর সমালোচনা ছিলো না। একটি স্বাধীন ও গনতান্ত্রিক দেশে একজন ছাত্র, একজন জনতা,একজন মজুর, একজন কৃষক সরকারের নীতির কঠোর সমালোচনা করতেই পারে। যা এ দেশেরই সংবিধান স্বীকৃত। এ দেশ, প্রত্যেকটি নাগরিকের বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করে বলে জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরও করেছে। এই দেশের ছাত্ররা বাকস্বাধীনতা ও গনতান্ত্রিক লড়াইয়ের অগ্রসৈনিক। এ দেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস অতিত থেকেই সমুজ্জ্বল। তাই একটি ফেসবুক পোষ্ট নিয়ে তাও আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুনোখুনি কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না। প্রযুক্তির কল্যানে খুনিদের চিহ্নিত করা সহজ হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা কেবল খুনিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেই খান্ত হবো না৷ যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সে পরিবেশও নিশ্চিত করতে হবে।
প্রথমে তাকে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়তের অঙ্গ সংগঠন, ছাত্রশিবির তকমা দেয়া হয়েছে। শিবির তকমা দিলেই খুনোখুনি বৈধ হয়ে যায় না। এটা বুঝতে বুয়েটের ‘মেধাবী ‘ ছাত্র হতে হয় না। সাধরণ জ্ঞানই যথেষ্ট। যদিও এ দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের পায়ের রগ কেটে পঙ্গু করে দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি কারী প্রথম দলছিলো ছাত্র শিবিরই।
আরবার ফাহাদ শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত নয় দাবী তার চাচার। তবে আবরারের চাচা বলেছেন তারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে যাুক্ত। তবে তার ভাতিজা মাঝে মাঝে তাবলীগে যেতো। এ দেশে একটি কথা প্রচলিত আছে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়া ছাত্ররা তাবলীগে যায় বেশি (?) । কথাটার সত্যতা কতটুকু তা আমি জানি না। কেন না, আজ-কাল অশ্লীল সিনেমায় অভিনয় করা নায়ক নায়িকা এবং দুর্নীতিতে জড়িত ছাত্রনেতাদের তাবলীগে যাওয়ার ঘোষনাও পত্রিকায় দেখি!
বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারত আমাদের নিকতম প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র। যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ যথেষ্ট অবদান রেখেছে। ব্যাক্তিজীবন ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে বন্ধু ও শত্রু দুটোই যে কোন সময় পরিবর্তনশীল। ব্যাক্তি জীবনে প্রতিবেশী বদলে ফেলার সুযোগ থাকলেও একটি রাষ্ট্র কিন্তু তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না, বদলেও ফেলতে পারে না। আর যদি সে রাষ্ট্রটির সাথে দীর্ঘ সীমান্ত থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই।
তাই বলে একটি রাষ্ট্র বৃহৎ হলে বা বন্ধু রাষ্ট্র হলে সব কিছু বিকিয়ে দিতে হবে তা তো হতে পারে না। জোটনিরপেক্ষ সংঘে যুক্ত থাকার কারনে পৃথিবীর যে কোন দেশের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক, বাণিজ্য, খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান হতে পারে। তা অবশ্যই হতে হবে জাতীয় স্বার্থ বজায় রেখে। এক তরফা কোন প্রেম পিড়ীতিই হয় না। আর তো বাণিজ্য ও সামরিক চুক্তি। আমরা কোন দেশের সাথেই বাণিজ্য ও সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের বিরোধী নই। তবে, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি হলে তার বিরোধীতা করার অধিকার সকল নাগরিকের রয়েছে। আর সররকারের কোন ভুল ও অসম বাণিজ্য নীতির বিরোধীতা করে কিছু লিখলে বা বললে কাউকে খুন করে ফেলা বা তাকে খুন করতে হবে এমন ভাবনা মাথায় আনা কেবল অগণতান্ত্রিক চেতনাই নয় অসভ্যতা ও বর্বরতা। লেখাকে লেখা দিয়ে, কথা কে কথা দিয়ে, যুক্তিকে যুক্তি দিয়ে খন্ডন করাই শিক্ষিত ও সভ্য মানুষের কর্ম। কেউ কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার সুপারিশ করেছেন। এটা হবে বাঙালি জাতী ও বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলেই মৌলবাদ আরো ছড়িয়ে পরবে এমনিতেই সমাজের অলিগলি পর্যন্ত মৌলবাদীদের দখলে চলে যাচ্ছে। স্বৈরতন্ত্রও স্থায়ী ভাবে জেকে বসবে জাতির ঘারে।
সমাজে, রাষ্ট্রে, বিশ্বে বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হলে। একজন মুক্তচিন্তক হিসেবে আমার চেয়ে কেউ বেশি খুশি হবে না। বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হোক, ধ্বংস হোক ফ্যাসিজম।