May 28, 2025 10:47 pm

Writer, Politician, Freethinker, Activist

May 28, 2025

Writer, Politician, Freethinker, Activist

কেরলের ‘চেরামান জুম্মা মসজিদ’: ভারতবর্ষের প্রথম মসজিদকেরলের ‘চেরামান জুম্মা মসজিদ’

Spread the love

চেরামান জুম্মা মসজিদ, ভারতবর্ষের প্রথম মসজিদ। ৬২৯ সালে স্থাপিত হয়৷ অর্থাৎ প্রোফেট মোহাম্মাদের জীবদ্দশায় এ মসজিদ তৈরী করা হয়। অবিশ্বাস্যই বটে! তবে ইতিহাস তাই বলছে। মিথালা গ্রাম, কডুঙ্গালুর এলাকার ত্রিশুর জেলার, কেরল রাজ্যে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক মসজিদ। কেরলের রাজা চেরামান, এই মসজিদটি মালিক ইবনে দিনার তার সহোদর, হাবীব ইবনে দীনার মাধ্যমে তৈরি করিয়ে ছিলেন।

ভারতবর্ষের প্রথম মসজিদ
চেরামান জামে মসজিদ

এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা নিয়ে কিছু উপাখ্যান (মিথ) রয়েছে। রাজা চেরামান পেরুমল একদিন স্বপ্নে দেখেন আকাশের চাঁদ দু ভাগ হয়ে গেছে। তিনি তার সভাসদ ও রাজ জোতিষদের কাছে এই স্বপ্নের ব্যাখা চান। কিন্তু কেউ তার স্বপ্নের ব্যাখা দিতে পারেননি। সে সময় কেরলের, মালাবারে আরব বনিকদের যাতায়াত ছিলো। তারা এ খবর শুনে রাজাকে জানান, আরবে নবী আছেন। নাম মুহাম্মদ, তারই হাতের ইশারায় চাঁদ দুখন্ডিত করেছিলেন। আপনি তাই দেখেছেন।

একথা শুনে রাজা তাদের সাথে মক্কা চলে যান এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। আরো মিথ রয়েছ; রাজা নিজেই সরাসরি চাঁদ দুভাগ হতে দেখেন এবং মুসলমান হয়ে যান। এ মিথ ধোপে টেকে না। কেন না, চাঁদ দ্বিখন্ডিত হতে দেখলেও তার তো বুঝার কথা নয়, যে কি ভাবে মুসলিম হওয়া যায়! বা ইসলাম নামে কোন ধর্ম আছে এটাই তো তার জানার কথা নয়। তবে কেউ কেউ বলেন, রাজার স্বপ্নের কথার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়ে আরব বনিকদের নিকট কেরলের রাজার পক্ষ থেকে কলসি ভড়ে ভরে আদার আচার ; আরবে প্রোফেট মোহাম্মদের নিকট পাঠান।

এ ছাড়া আরো মিথ আছে কেরলের রাজা, আরব বনিকদের সাথে মক্কায়,চলে যান এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তবে পথে কঠিন অসুখে পরেন এবং মারা যান। মরে যাওয়ার আগে তার বংশধরদের উদ্দেশ্যে অছিয়ত নামা মালেক ইবনে দিনারের হাতে পাঠিয়ে দেন। যাতে কেরলে একটি মসজিদ স্থাপন করা হয়। এবং মালেক ইবনে দীনার ও তার ভাইকে সার্বিক সহযোগীতা করা হয়। রাজার বংশধরেরা অছিয়ত নামা বিশ্বাস করে এবং বাস্তবায়ন করে। অর্থাৎ মসজিদ নির্মান ও ঐ দুই সাহাবীকে আশ্রয় দেয় কেরল রাজা চেরামানের পরিবার।

আরো একটি মিথ রয়েছে আরব বণিকেদের ব্যবসার কারনে, কেরল রাজা চেরামান আরব বণিকদের কাছ থেকে শুল্ক পেতেন। আর এই আরব বণিকদের সুবিধার্থেই একটি মসজিদ নির্মান করে দেন। এতে ধর্ম গ্রহন বা আরবদের ধর্ম প্রচার উদ্দেশ্য ছিলো না। কেবল, আরব বণিকদের নিজেদের ধর্ম যাতে নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে তার জন্য এই মসজিদটি তৈরী করা হয়।

ঘটনা যা ই হোক ভারতবর্ষে মসজিদটি এখন ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। মসজিদে সেই সময়ের তথা প্রায় ১৪ শত বছর আগের হস্তলিপি রয়েছে। এবং এক হাজার বছর যাবৎ প্রদীপও জ্বলমান! শুক্রবারে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মুসলিম জুম্মার নামাজ আদায় করে থাকে। আরো বিস্ময়কর বিষয় হলো, অনেক পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। এবং মসজিদটি সকল সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত। তবে এই প্রাচীন মসজিদটি শুরুতে সমসাময়িক মসজিদের মত ছিলো না। এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ ছয়বার আকার ও আয়তনে পরিবর্তন আনা হয়ে।

মসজিদের অভ্যন্তরে সেই ১৪ শত বছর আগের কিছু জিনিসও সংগ্রহে রাখা হয়েছে। এমন কি ঘর তথা মসজিদ তৈরীর কিছু কিছু জিনিস আজো অবিকল রয়েছে! যা যথারীরতি গবেষণার বিষয়। ভারতের প্রায়ত প্রেসিডেন্ট এ পি জে আবুল কালাম এ ঐতিহাসিক মসজিদটি পরিদর্শনে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঐতিহাসিক মসজিদটির একটি রেপ্লিকা, সৌদী আরবের অলিখিত বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ বিন সউদকে উপহার দেন। কেরলের রাজা চেরামান পেরুমলের এই ঐতিহাসিক মসজিদটি কেবল ভ্রমণের বিষয় নয়, গবেষণারও বিষয়।

এই ক্যাটাগরির আরো ব্লগপোস্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন…..


Spread the love
Tags :

Grid News

Latest Post

Find Us on Youtube